আমার শৈশবের চাঁদ রাত – সোহেল রানা
ঈদের আসল মজা ছিলো শৈশবে। মনে পড়ে সেই ছোটবেলার চাঁদ রাতের কথা। তখন সারা রোজার সময় অপেক্ষার প্রহর গুনতাম কবে হবে ঈদ।
আমাদের ছোটবেলায় ঈদ হতো শীতকালে। ২৯শে রমজান থেকে মন প্রান আনন্দে, উচ্ছ্বাসে ভরে যেতো। মনে হতো পরের দিন তো ঈদ। কিন্তু সেই প্রতীক্ষিত চাঁদের দেখা না মিললে আরো এক দিনের অপেক্ষায় থাকতে হতো।
সন্ধ্যার আকাশে কুয়াশা ঢেকে যেতো। ইফতারের পর পরই পশ্চিম আকাশে সবাই তাকিয়ে থাকতাম। কার আগে কে চাঁদ দেখতে পাবে-এক ধরনের প্রতিযোগীতা লেগে থাকতো। ঈদের বাঁকা চাঁদ দেখার সাথে সাথেই অজানা আনন্দে মনের মধ্যে খুশির বন্যা বয়ে যেতো।
চাঁদ দেখা যাওয়ার সাথে সাথেই বিশেষ ঘোষণা নিয়ে আসা বিটিভির উপস্থাপিকর মাথার কাপড় সরে যেতে। বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং রেডিওতে সমবেত কন্ঠে শুরু হয়ে যেতো “রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ” গানটি।
জীবনে সবচেয়ে মনকাড়ানো ছিল চাঁদ রাতের আড্ডাগুলো। ঢাকা থেকে সবাই বাড়িতে আসতো রাতে হতো আমাদের স্পেশাল পিকনিক এর আয়োজন। গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা দিতাম। সে যত শীতের রাতই হোক,পরিবারের কঠিন বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা থাকতাম একসাথে।
আহ্ কি আনন্দ, কি উচ্ছ্বাস ছিলো সেই সময়। এখন সব ডিজিটাল হয়ে গেছে। ফেসবুকে বসেই এখন আকাশের চাঁদ দেখা যায়। সময়ের সাথে সাথে এখন জীবনের অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে গেছে। ঈদ আসে বছর ঘুরে কিন্তু ঈদের চাঁদ রাতের মজা আগের মতো নেই। সবই এখন শুধু স্মৃতি। আহ্ আবার যদি ফিরে পেতাম আমাদের ছোট বেলা, আমাদের সেই শৈশব।
ঈদ সবার জন্য নিয়ে আসুক সুখ,সমৃদ্ধি ও অপার আনন্দ। ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা রইল সবার জন্য।
ঈদ মোবারক।
লেখকঃ সোহেল রানা. অনলাইন এক্টিভিস্ট
প্রিয় পাঠক, ডেইলি খবরের ডটকমে আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাসে আপনার কমিউনিটির নানান খবর, ভ্রমণ, আড্ডা, গল্প, স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন khoborernews@gmail.com এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।